#Quote

আবার অন্যদিকে এমন অত্যুক্তিও করা চলে না যে কবি ও যোগী এক ও অভিজ্ঞ কাব্যরচনা ও যোগ-সাধনায় পার্থক্য নেই, কবির তবুও হল বাঙ্ময় জগৎ এবং সেটি মানসলোকের অন্তর্ভুক্ত। কবির যে অন্তরাত্মার জ্যোতি তা এই বাঙ্ময় মানসলোককে ভাস্বর, অধ্যাত্মপ্রবণ করে তোলে।

Facebook
Twitter
More Quotes by Bishnu Dey
সূর্য ফের প্রত্যহই সহিষ্ণু আস্থায় উদয় - শিখরে ।
শান্তি অন্তরের ইন্দ্রিয়কে, বাহিরের ইন্দ্রিয়কে উদার প্রসারিত করিয়া ধরে, আর এইজন্যই সেখানে আসিয়া ধরা দেয় অন্তরের অসীমের স্বাচ্ছন্দ্য। শান্তির মধ্যেই গাঢ় হইয়া জমিয়া উঠে একটা আত্মস্থ সামক্ষ্য শান্তি স্বচ্ছতা দৃষ্টিকে লইয়া চলে গভীর হইতে গভীরে।
লােকনৃত্যের প্রেরণা ও প্রয়ােগ অনেকখানি নির্ভর করে তার সামাজিক উপলক্ষে। শহুরে মঞ্চের উপরে অনেক নৃত্যই মানায় না, অধিকন্তু দর্শকরা তার প্রেরণায় অংশ নিতে অক্ষম।
সভ্যতার আর একটি বড় প্রত্যয় হচ্ছে ব্যক্তিত্ববােধ। কি করে সমাজ ও ব্যক্তিতে দ্বন্দ্বাশ্রয়ী সম্বন্ধের দীর্ঘ ইতিহাসে এই ব্যক্তি স্বরূপ মর্যাদা পেতে লাগল, তার ব্যাখ্যা সভ্যতার ইতিহাস। বহির্জগতে বিরুদ্ধশক্তি, অন্ধপ্রকৃতি, জন্তু-জানােয়ার, হিংস্র-গােষ্ঠীর দলাদলি যতদিন না মানুষের শুভবুদ্ধি কর্তৃত্বে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা পেয়েছে ততদিন ব্যক্তির এই মহিমা কবিদের মনেও আসেনি। বাল্মীকি বা হােমার গােষ্ঠীর রচনাই করছেন, রবীন্দ্রনাথই বলতে পেরেছেন স্বকীয়তার কথা।
উপনিষদের কবি পূর্ণমাত্রায় যোগী ও ঋষি ছিলেন। উপনিষদ কবিত্ব হিসাবে যতখানি উৎকৃষ্ট, সাধনার মন্ত্র হিসাবেও ততখানি গ্রহণীয়। কবি ও যোগী এখানে এক হয়ে, উভয়ে উভয়ের অভিব্যক্তি হয়ে প্রমূর্ত—পরস্পরং ভারয়ন্তঃ।
সত্যের সাধক যিনি তাঁহাকে বলি ঋষি, সুন্দরের সাধক যিনি তাঁহাকে বলি কবি, আর শিবের বা মঙ্গলের সাধক যিনি তাঁহাকে বলি নবী। ঋষি সত্যের দ্রষ্টা, কবি সুন্দরের স্রষ্টা, নবী মঙ্গলের হোতা। ঋষির আছে জ্ঞানদৃষ্টি, কবির রসানুভূতি, আর নবীর তপঃশক্তির আকুতি। ঋষির আসন মস্তকে, কবির আসন প্রাণে, আর নবীর প্রতিষ্ঠা হৃদয়ে। অথবা আরো বলিতে পারি, ঋষি হইতেছেন সময় পুরুষ, নবী ইতেছেন চিন্ময় পুরুষ, আর কবি হইতেছেন আনন্দময় পুরুষ।
ভাষার একটা স্বাভাবিক স্থিতিপ্রবণতার জন্য রচনার গতিতে আসে দ্বিধা। গতিতে গা ভাসালে অবশ্য খুঁটিতে বাঁধা মনের দ্বিধাও নিষ্প্রয়ােজন। সজীব রচনাতে তাই শিল্পী ও শিল্পবস্তু, বিষয় ও টেকনিকে টান পড়ে জ্যা বদ্ধ ধনুকের টংকারে ধনু ও ছিলা টানের
বন্ধুত্বের পারস্পরিকতায় যে কথা মুখে বলা যায়, সে কথা কাগজের শীতল প্রকাশ্যতায় লেখা অর্থহীন।
শিক্ষার মধ্যে তিনটি স্তর বা ধারা আছে। প্রথম বিষয় অধিকার ও দ্বিতীয়, বৃত্তির চর্চা, আর তৃতীয়, মনের গড়ন ঠিক করা, সামর্থ্য বাড়ান। প্রথম হইতেছে বিশেষ বিশেষ বিদ্যায় পারদর্শী হওয়া, তৎসম্বন্ধে যত তত্ত্ব ও তথ্য আছে তাহা জানা যা আবিষ্কার করা। দ্বিতীয় হইতেছে মনের বিশেষ বিশেষ বৃত্তিকে মাজিয়া ঘষিয়া তীক্ষ্ণ ও পুরিপুষ্ট করিয়া তোলা—যেমন স্মৃতির শক্তি অথবা বিচার-বিতর্কের শক্তি অথবা সাজাইয়া গুজাইয়া ধরিবার শক্তি।
লৌকিক সংস্কৃতির আকর্ষণ যেন জীবন্ত মানুষকে আমাদের জাদুঘরের সামগ্রী না করে তােলে।