#Quote
More Quotes by Bishnu Dey
শিক্ষার মধ্যে তিনটি স্তর বা ধারা আছে। প্রথম বিষয় অধিকার ও দ্বিতীয়, বৃত্তির চর্চা, আর তৃতীয়, মনের গড়ন ঠিক করা, সামর্থ্য বাড়ান। প্রথম হইতেছে বিশেষ বিশেষ বিদ্যায় পারদর্শী হওয়া, তৎসম্বন্ধে যত তত্ত্ব ও তথ্য আছে তাহা জানা যা আবিষ্কার করা। দ্বিতীয় হইতেছে মনের বিশেষ বিশেষ বৃত্তিকে মাজিয়া ঘষিয়া তীক্ষ্ণ ও পুরিপুষ্ট করিয়া তোলা—যেমন স্মৃতির শক্তি অথবা বিচার-বিতর্কের শক্তি অথবা সাজাইয়া গুজাইয়া ধরিবার শক্তি।
শান্তি অন্তরের ইন্দ্রিয়কে, বাহিরের ইন্দ্রিয়কে উদার প্রসারিত করিয়া ধরে, আর এইজন্যই সেখানে আসিয়া ধরা দেয় অন্তরের অসীমের স্বাচ্ছন্দ্য। শান্তির মধ্যেই গাঢ় হইয়া জমিয়া উঠে একটা আত্মস্থ সামক্ষ্য শান্তি স্বচ্ছতা দৃষ্টিকে লইয়া চলে গভীর হইতে গভীরে।
সে কাল ও একালের ব্যবধানটি এককথায় নির্দেশ করিতে হইলে বলিতে পারি যে, সেকালের শিল্পীরা মুখ্যত চাহিতেন সৌন্দর্য, আর একালের শিল্পীরা চাহেন সত্য। সুন্দর একখানি রূপ গড়িয়া তোলা ছিল প্রাচীন শিল্পীর সকল প্রয়াস, আধুনিকের একমাত্র যত্ন সত্যকে, নিছক সত্যকে প্রকাশ করিয়া ধরা। এই আকৃতি ও প্রকৃতি সম্পূর্ণ বিভিন্ন, এমনকি হয়তো বিপরীত ধরনের হইয়া পড়িয়াছে।
অঙ্গে রাখিনা কারোই অঙ্গিকার? চাঁদের আলোয় চাঁচর বালির চড়া । এখানে কখনো বাসর হয় না গড়া? মৃগতৃষ্ণিকা দূর দিগন্তে ডাকি? আত্মাহুতি কি চিরকাল থাকে বাকি?
মহাকাব্যের যুগ চলিয়া গিয়াছে, আমরা আধুনিকেরা বলিয়া থাকি। কারণ দিই এই যে, বাহ্য ঘটনা-পরম্পরার দিকে শিল্পী আর মন দিতে পারেন না, আধুনিক শিল্প অন্তর্মুখী, তিনি বলিতে চাহেন ভিতরের জগতের রহস্যের কথা তাই আজকাল হইতেছে বিশেষভাবে গীতিকাব্যের যুগ। আরো একটা কারণ এই, মহাকাব্য রচনা করতে প্রয়োজন চিত্তের মধ্যে যে অবসর, যে স্থৈর্য-ধৈর্য, যে টানা দম তা আধুনিকের নাই।
লােকশিল্প বাস্তববিরােধী নয়, বাস্তব পরিপক্ক পরােক্ষ (আবস্ট্রাক্ট ফর্ম) আসলে তার লােকায়িত মুক্তিই।
লাঙল ফলায় চেতনাকে করাে উর্বর তবে তাে ফলবে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মনের ফসল, তবে তাে গড়বে যন্ত্র হাতের দরদে সচল।
বিচার দেয় খণ্ডের অনুভূতি, এক সময়ে একটি জিনিসের এক রকম জ্ঞান, কিন্তু বিবেকে পাই গোটার অনুভূতি, এক সময়ে এক জিনিসের বা বহু জিনিসের বহুল রূপের জ্ঞান এক বহু বহুধা’র সমন্বয় সম্মিলন হইতেছে বিবেকের জ্ঞান।
বন্ধুত্বের পারস্পরিকতায় যে কথা মুখে বলা যায়, সে কথা কাগজের শীতল প্রকাশ্যতায় লেখা অর্থহীন।
জীবনের ছন্দ এক, শিল্পের ছন্দ আর এক; শিল্পের মধ্যে জীবনকেই যদি মূর্ত করিয়া ধরিতে চাই, তবুও জীবনের গতিভঙ্গীকে হুবহু শিল্পের গতিভঙ্গীর মধ্যে তুলিয়া ধরিতে পারি না। জীবনকে শিল্পের মধ্যে তুলিয়া ধরিতে হইলেই দরকার একটা রূপান্তর পাশ্চাত্যে ইহার নাম দিয়াছে —এই রূপান্তরের অর্থই শিল্পগত সৌন্দর্য।